প্রশ্ন: সরকারী আইন লঙ্ঘণ করে অর্থ উপার্জন করা কি বৈধ? যেমন ডাক্তারদের জন্য সরকারের একটি আইন হল, একজন ডাক্তার তার পেশার বাইরে একটির বেশি ক্লিনিকে যুক্ত হতে পারবে না।
উত্তর:
রাষ্ট্র কিছু আইন করে জনকল্যাণের স্বার্থে। এ সব আইন নাগরিকদের জন্য পালন করা আবশ্যক। অন্যাথায় গুনাহগার হতে হবে। কারণ ইসলাম সব সময় সঠিক ও কল্যাণকর বিষয়ে উৎসাহিত করে। সুতরাং আইন বিরোধী কাজ করা জায়েয নয় যতক্ষণ তা শরীয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়।
বর্তমানে অনেক ডাক্তারকে দেখা যাচ্ছে, তারা সরকারী হাসপাতালে চাকুরী করে কিন্তু অন্যান্য একাধিক ক্লিনিকের সাথে কন্টাকবদ্ধ থাকার কারণে অতিরিক্ত অর্থ আয়ের উদ্দেশ্যে নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে রোগীদেরকে তার কন্টাককৃত ক্লিনিকে ট্রান্সফার করার ধান্ধায় থাকে। এতে যেমন রোগীরা পর্যাপ্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অন্য দিকে আর্থিকভাবেও বিরাট ক্ষতির মুখে পড়ছে।
সরকার ডাক্তারদের এ ধরণের ধান্ধাবাজী বন্ধ করার উদ্দেশ্যে হয়ত এই আইন প্রণোয়ন করেছে।
সুতরাং সাধারণ নাগরিকদের কল্যাণের উদ্যেশ্য প্রণীত নীতি ও আইন-কানুনের প্রতি সম্মান দেখানো সবার জন্য জরুরি-যদি তা ইসলামী শরীয়তের বিরুদ্ধে না হয়। অত:এব ইচ্ছাকৃতভাবে তা লঙ্ঘন করা বৈধ নয়। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে গুনাহগার হবে। তবে সে অতিরিক্ত যে কাজটা করছে তা যদি বৈধ হয় তাহলে তার উক্ত উপার্জনকে হারাম বলা যাবে না-কারণ এখানে মূল কাজটা বৈধ। কিন্তু আইন লঙ্ঘণ করার কারণে সে গুনাহগার হবে।
আরেকটি বিষয় হল, একজন ডাক্তার বা সরকারী চাকুরিজীবি যখন কোন কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত হয় তখন এ সব নিয়ম-কানুন ও শর্তাবলী জেনে-বুঝে নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করে। অর্থাৎ সে সরকারের সাথে এ সব নিয়ম ও শর্তাবলী পূরণের বাধ্য। সুতরাং নিয়োগ পাওয়ার পর শর্ত লঙ্ঘনের কোন সুযোগ নেই। অন্যথায় সে অন্যায়কারী হিসেবে পরিগণিত হবে। কেননা রাসূল সা. বলেন:
الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
“মুসলিমগণ তাদের সাথে কৃত শর্তের উপর অবিচল থাকবে।” (তিরমিযি : ১৩৫২, আবু দাউদ :৩৫৯৪-সহীহ)
কেউ যদি এই নিয়ম মানতে না চায় তাহলে এ পেশায় যোগ না দিয়ে স্বাধীনভাবে সে অর্থ ইনকামের পথ বেছে নিতে পারে।
মোটকথা, যা কিছু কল্যাণকার ইসলাম সব সময় তা গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে। অনুরূপভাবে মুসলিম ব্যক্তি সবসময় চুক্তি ও শর্ত ঠিক রাখবে ইসলাম তারাই নির্দেশনা দেয়। এর ব্যতিক্রম করা ভালো মুসলিমের বৈশিষ্ট নয়। আল্লাহু আলাম
✒✒✒✒✒✒
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব।।