যে সকল আত্মীয়-স্বজন নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা বৈধ

প্রশ্ন: যেসব আত্মীয়-স্বজন (যেমন শশুর-শাশুড়ি) কুফরি কালাম বা যাদু-টোনার মাধ্যমে সংসার ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করে, সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে, সংসারের সদস্যদের শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন করে। এ ধরণের আত্মীয়দের সাথে কি সম্পর্কচ্ছেদ করা জায়েজ আছে? তাদের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ-দেখাসাক্ষাৎ না করলে কি গুনাহ হবে?

উত্তর:

যাদের সাথে সম্পর্ক রাখলে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের ক্ষত-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে সম্পর্কচ্ছেদ করা বা কথাবার্তা ও যোগাযোগ বন্ধ করা জায়েয রয়েছে তারা রক্ত সম্পর্কীয় বা একান্ত নিকটাত্মীয় হলেও।

সামাজের কিছু মানুষ অন্যের ক্ষতি করতে বা মানুষকে কষ্ট দিতে সিদ্ধহস্ত। তাই অন্যরা সাধ্যমত তাদের থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। এমন মানুষ আল্লাহ তা‘আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট।
মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে অথবা কারো কথাবার্তা ও আচার-আচরণ খারাপ হলে তাদের থেকে দূরে থাকার অনুমতি পাওয়া যায় নিম্নোক্ত হাদীস সমূহ থেকে:

 ১. ‘আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ شَرِّهِ

‘‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে যাকে অন্যরা পরিত্যাগ করে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্যে’’। (বুখারী ৬০৩২; মুসলিম ২৫৯১)

 ২) রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ وَدَعَهُ أَوْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ
“কিয়ামতের দিনে আল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তি নিকৃষ্ট স্তরের বলে গণ্য হবে, যাকে লোকজন তার দুর্ব্যবহারের জন্য পরিত্যাগ করে।” (মুসলিম: ৬৪৯০; বুখারী: ৬০৩২; আবূ দাউদ; ৪৭৯১)।
 ৩. রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ ـ أَوْ وَدَعَهُ النَّاسُ ـ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ
“নিশ্চয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যাগ করে।” (বুখারী: ৬০৫৪)।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সমাজের অসাধু, ক্ষতিকর ও খারাপ মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
আল্লাহু আলাম।

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (মাদানি)
জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।।