পিতামাতা যদি মেয়েকে তাবিজ ব্যবহার করতে বাধ্য করে

প্রশ্ন: মেয়ে জানে যে তাবিজ পরা শিরক কিন্তু বাবামা যদি তাকে জোর করে তাবিজ পরতে বাধ্য করে তাহলে তার কী করণীয়?
তাবিজ না পড়লে বাবামা নানাভাবে টর্চার করে, নামায-রোযা, পর্দা ও অন্যান্য ইবাদাত-বন্দেগিতে বাঁধা দেয়। এছাড়া বিভিন্নভাবে খারাপ আচরণ করে। তখন তাদের এ সব অত্যাচারের ভয়ে মেয়ে যদি অনিচ্ছাকৃত বাধ্য হয়ে তাবিজ ব্যবহার করে তাহলে কি সে গুনাহগার হবে না কি বাবামা গুনাহগার হবে?

উত্তর:
– প্রথমত: মেয়ের কাজ হবে, পিতামাতকে তাবিজ ব্যবহারের শরঈ হুকুম সম্পর্কে সাধ্যমত বুঝানেরা চেষ্টা করানো যে, তাবিজ ব্যবহার করা হারাম। এ মর্মে অনেক হাদীস রয়েছে। হাদীসগুলো তাদেকে শুনানোর চেষ্টা করবে।
– তারা এগুলো বুঝলে না চাইলে সে জন্য তারাই দায়ী থাকবে। কিন্তু মেয়ে তার দায়িত্ব পালনের কারণে নেকি পাবে ইনশাআল্লাহ।
– অত:পর মেয়ে তাবিজ না পরার ব্যাপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করবে এবং যথাসাধ্য তা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবে।
– কিন্তু তারপরও যদি তারা তাকে বাধ্য করতে চায় তাহলে ইনশাআল্লাহ এতে তার গুনাহ হবে না। কারণ সে তাদেরকে প্রতিহত করতে সক্ষম নয়। আর আল্লাহ তাআলা নিরুপায় ও বাধ্যগত অবস্থায় কৃত অন্যায়কে ক্ষমা করে দিবেন যদি সে কাজটির প্রতি অন্তরে তার প্রতি ঘৃণাবোধ থাকে।

 আল্লাহ তাআলা বলেন:

مَن كَفَرَ بِاللَّـهِ مِن بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَـٰكِن مَّن شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِّنَ اللَّـهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
“যার উপর জবরদস্তি করা হয় এবং তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত যে কেউ বিশ্বাসী হওয়ার পর আল্লাহতে অবিশ্বাসী হয় এবং কুফরির জন্য মন উন্মুক্ত করে দেয় তাদের উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে শাস্তি।” (সূরা আন নহল: ১০৬)
 হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
عُفِيَ لأمَّتي عن الخطأِ والنِّسيانِ وما استُكرِهوا عليهِ
“আমার উম্মতের হঠাৎ ঘটে যাওয়া ভুল, স্মরণ না থাকার কারণে ঘটে যাওয়া অন্যায় এবং জোরজবরদস্তি করে কৃত অপরাধকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।” (ইবনে হাযম রা. রচিত আল মুহাল্লা, তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন)
– তাবিজ পরতে বাধ্য করার কারণে পিতামাতা গুনাহগার হবে। কিন্তু মেয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে যাবে ইনশাআল্লাহ। কারণ সে ছিল নিরুপায় ও জুলুমের শিকার।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ইসলামের সঠিক জ্ঞান দান করুন এবং সব ধরণের অন্যায় কর্ম থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
——————-
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।।