নতুন চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে যার কথা গ্রহণযোগ্য কে সেই আদল ব্যক্তি

প্রশ্ন: আমি (1584) নং প্রশ্নের উত্তরে পড়েছি যে, রমজান মাসের শুরু প্রমাণিত হওয়ার ক্ষেত্রে একজন আদল ও ছিকা ব্যক্তির চাঁদ দেখা যথেষ্ট। সে আদল  ব্যক্তির পরিচয় কি?

উত্তর:

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

আদল (عَدْل) এর শাব্দিক অর্থ মুস্তাক্বীম (সরল, সোজা)। এটি বক্রতার বিপরীত।

শরিয়তের পরিভাষায়: আদল  হলেন সেই ব্যক্তি যিনি সমস্ত ফরজ পালন করেন, কোন কবিরা গুনাতে লিপ্ত নন এবং উপর্যুপরি সগিরা গুনাতেও লিপ্ত নন।

ফরজ পালন করার অর্থ হল- ফরজ ইবাদতসমূহ আদায় করা। যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামায।

কবিরা গুনাহ না করার অর্থ- নামিমাহ্‌ (চোগলখুরী), গিবত (অপরের অগোচরে পরনিন্দা) ইত্যাদি কবিরা গুনাহ না করা।

সেই ব্যক্তির মধ্যে আদল হওয়ার সাথে সাথে আরো যে শর্ত থাকতে হবে তা হলো:

সেই ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি প্রখর হতে হবে। যাতে করে তার দাবীর সত্যতার পক্ষে সম্ভাবনা বেশি থাকে। দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হলে আদল হওয়া সত্ত্বেও তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়ায় তার সাক্ষ্যে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অধিক। এই শর্তটির পক্ষে দলীল হলো- আল্লাহ তাআলা কোন কাজের দায়িত্ব দেয়ার জন্য শক্তি ও আমনতদারিতাকে উপযুক্ত বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন। মূসা আলাইহিস সালামের সাথে মাদইয়ানের (এক বৃদ্ধ) অধিবাসীর কাহিনীতে তার দুই মেয়ের একজন বলেছিলেন:

{ يا أبت استأجره إن خير من استأجرت القوي الأمين } [28 القصص : 26]

“আব্বু, ইনাকে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজে নিয়োগ করুন। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কারও থেকে কাজ নিতে চাইলে এমন ব্যক্তিই উত্তম যে শক্তিশালী ও আমানতদার।” [২৮ সূরা আল-ক্বাসাস: ২৬] ইফরিত নাম্নী যে জ্বিন সাবা রাজ্যের রানীর সিংহাসন উঠিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সে বলেছিল:

{ وإني عليه لقوي أمين } [27 النمل : 39]

“এবং নিশ্চয়ই আমি এ ব্যাপারে শক্তিবান ও আমানতদার।”[২৭ সূরা আন নাম্‌ল : ৩৯]

তাই (শক্তি ও আমানতদারিতা) এ দুইটি গুণ থাকা যে কোন দায়িত্বপ্রাপ্তির প্রধান দুটি শর্ত। সাক্ষ্য প্রদানও এমনি একটি গুরু দায়িত্ব। [আশ-শার্‌হ আল-মুমতি‘ (৬/৩২৩)]  আরও জানতে দেখুন আলমূসূআহ  আলফিক্বহিয়্যাহ(ফিক্বহী এনসাইক্লোপিডিয়া) (৫/৩০),

প্রকাশনায়: কুয়েত।

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব।।