ইবাদত করার পর আত্মতৃপ্তিতে ভোগা ইবাদত ধ্বংসের অন্যতম কারণ

প্রশ্ন: আমি শুনেছি যে, যখন মানুষ নিজে অন্যের চেয়ে বেশি আমল করে আত্মতৃপ্তি লাভ করবে এবং নিজেকে অন্যের চেয়ে ভালো মনে করবে তখন তার আমল ধ্বংস হয়ে যাবে। একথা টা কি ঠিক? জানালে উপকৃত হবো

উত্তর: আমল করার পরে আত্মতৃপ্তিতে ভোগার কোনও সুযোগ নেই। ইবাদত করার পর নিজে নিজে আত্মতুষ্টিতে ভোগা হোক অথবা অন্যের তুলনায় অধিক ইবাদত করার কারণে হোক।
কোন ব্যক্তি আমল করার পরে যখন আত্মতৃপ্তিতে ভোগে বা নিজেকে অন্যের তুলনায় শ্রেষ্ঠ ভাবতে শুরু করে তখন এটি তার আমল ধ্বংসের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
আনাস রা. হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
ثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ شُحٌّ مُطَاعٌ وَهَوًى مُتَّبَعٌ وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ وَهِيَ أَشَدُّهُنَّ
“তিনটি জিনিস ধ্বংস সাধনকারী:
(১) লোভের দাস হওয়া
(২) প্রবৃত্তির অনুসারী হওয়া
(৩) এবং আত্মতৃপ্তিতে ভোগা। আর এটিই হ’ল সবচেয়ে মারাত্মক।”
[বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭৪৫, মিশকাত হা/৫১২২; সহীহ তারগীব হা/৫০, সহীহাহ হা/১৮০২। শাইখ আলবানী হলেন, এর সনদ হাসান লি গাইরিহ, দেখুন: তাখরিজ মিশকাতুল মাসাবীহ, হা/ ৫০৪৯ ]
সুতরাং কোনও ব্যক্তি নিজে নিজে আমল করার পরে বা অন্যের তুলনায় নিজের আমল বেশি হওয়ার কারণে যদি আত্মতৃপ্তিতে ভোগে তাহলে এটি তার আমল কে বরবাদ করে দেবে।

আমাদের আরও জানা দরকার যে, ইবাদতের তিনটি রোকন (স্তম্ভ) রয়েছে। সেগুলো হল:
১) ভয়
২) ভালোবাসা
৩) আশাঅর্থাৎ ইবাদতের সময় আল্লাহ তায়ালার প্রতি মনে ভয় সঞ্চারিত করতে হবে এবং ইবাদত করার পরে মনে এই ভয় রাখতে হবে যে, আল্লাহ তাআলা হয়তো উক্ত ইবাদত টি কবুল করবেন না।
সুতরাং ইবাদতের মধ্যে ভয়-ভীতি, একাগ্রতা এবং বিনয়-নম্রতা বিদ্যমান থাকা আবশ্যক। তাই এ ক্ষেত্রে আত্মতৃপ্তিতে ভোগার এবং নিজেকে অন্যদের থেকে ভালো মনে করার কোন সুযোগ নাই। বরং প্রত্যেক বান্দার করণীয় হল, একান্ত ভয়-ভীতি ও বিনয়-নম্রতা সহকারে অবনত চিত্তে আল্লাহর আনুগত্যের নিকট আত্মসমর্পন করা।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।

▬▬▬✪✪✪ ▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স: মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব